নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারত মহাসাগরের সোমালিয়ায় জলদস্যুর হাত থেকে টানা তেত্রিশ দিন জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে অবশেষে মা-বাবার কাছে ফিরে এসেছেন নোয়াখালীর আনোয়ারুল হক রাজু। তিনি সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমবি আবদুল্লাহ জাহাজে কর্মরত ছিলেন। ছেলেকে কাছে পেয়ে অঝোরে কাঁদলেন মা দৌলত আরা বেগম। রাজুও পরিবারের কাছে ফিরতে পেরে আনন্দিত।

দীর্ঘ তেত্রিশ দিন ছিলেন বন্দী। জাহাজে সোমলিয়ার জলদস্যুরা অন্য ২৩ জন নাবিকের সাথে রাজুকেও জিম্মি করে রেখেছিলেন। ছেলে জিম্মি হওয়ার পর থেকে মা-বাবার যেন দুশ্চিন্তার শেষ নেই। অবশেষে ছেলে বাড়িতে আসায় তারাও যেন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। রাজুও খুশি পরিবারের কাছে আসতে পেরে। সোমবার (১৪ মে) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে বাড়িতে আসেন রাজু। মা তার পছন্দের অনেক পদের রান্না করে রেখেছিলেন। রাজু আসার পর পোলাও রান্না করেছেন। মায়ের হাতের রান্না খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছেন রাজু।

রাজু বাড়িতে ফিরে এসেছেন। আমরা খুবই খুশি,আনন্দিত। দুঃখ, হতাশা কেটে গেছে।আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, রাজুকে পৌঁছে দেয়ার জন্য।

রাজুর বাবা আজিজুল হক বলেন, আমার ছেলে ফিরে আসছে, আমি খুব খুশি। আত্নীয় স্বজন সবাই আসতেছে। তাদের সাথে আমি অনেক দিন পর হাসি মুখে কথা বলতে পারছি। একটা মাস রাজুর কোনো খবর ছিল না, আমি খুব চিন্তিত ছিলাম।
রাজুর বন্ধু বলেন, বেঁচে থাকলে দেখা হবে, এমন একটি বার্তা পেয়ে আমরা বন্ধু, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্নীয়-স্বজন খুব উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিলাম। ছোট থেকে এক সাথে বড় হয়েছি। আমরা তার পরিবারের পাশে ছিলাম।

আনোয়ারুল হক রাজু বলেন, মহান আল্লাহর কাছে অশেষ শুকরিয়া, পরিবারের কাছে ফিরে এসেছি। আমার সাথে দেখা হয়েছে। মায়ের হাতের রান্না খেয়েছি।এটার চেয়ে খুশি আর কি হতে পারে।বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্নীয়-স্বজন সবাই দেখতে আসতেছে। আমার বিপদে সবাই আমার পরিবারের পাশে ছিল, আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ।

জিম্মিদশায় সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় ছিল, ঘুম থেকে যখন উঠতাম তখন দেখতাম আমাদের দিকে বন্দুক তাক করা। সবচেয়ে কষ্টকর, সবাই মিলে একটা ওয়াশরুম ব্যবহার করা।

জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে পরিবারের কাছে আসতে পেরে আনন্দিত রাজু, তাকে কাছে পেয়ে খুশি তার পরিবার। তেমনি মুক্তি পাওয়া সকল জিম্মিকেও কাছে পেয়ে তাদের পরিবার আনন্দিত।