টানা বৃষ্টিতে বাগেরহাটে সবজি ও মাছের প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে সাড়ে ৭ হাজার মাছের ঘের। ফসল নষ্ট হয়েছে ২১ হাজার কৃষকের।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও জেলা মৎস্য অফিসের সর্বশেষ হিসেবের পর এই তথ্য জানা গেছে। তবে চাষিদের দাবি ক্ষয়ক্ষতির এ পরিমাণ আরও অনেক বেশি হবে। এ ক্ষতির কারণে ঋণগ্রস্ত কৃষকেরা চরম বিপাকে পড়েছেন।

বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শংকর কুমার মজুমদার জানান, বাগেরহাটে রোপা আমনের ৪৫৩০ হেক্টর জমি, সবজির ২১৬ হেক্টর ও পানের ৩৭ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত ছিল। এতে ২১ হাজার ১৩৬ জন কৃষকের ৩৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

অন্য দিকে মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবারের বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গলদা চিংড়ি উৎপাদনের অন্যতম এলাকা জেলার ফকিরহাট, চিতলমারী ও মোল্লাহাট উপজেলার চাষিরা। এর সঙ্গে মোংলা, রামপাল ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার চাষিদের ক্ষতির পরিমাণও কম নয়। চাষিদের দাবি কয়েকশ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে এই পানিতে।

চিতলমারী উপজেলার বারাশিয়া বিলের মেসার্স জাহিদ ট্রেডার্সের মালিক জাহিদুল ইসলাম জানান, ওই বিলে তার প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে মাছের ঘের রয়েছে। সেখানে চিংড়িসহ অনেক প্রজাতির মাছ রয়েছে। আর কয়েকদিন পরে তিনি মাছ ধরা শুরু করবেন, এমনটাই ভেবেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টিতে সম্পূর্ণ ঘের ডুবে সব মাছ বের হয়ে গেছে। এখন তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বলে জানান।

ফকিরহাট উপজেলার ফলতিতা এলাকার কাজী মিরাজুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির পানিতে ঘের ডুবে একাকার হয়ে গেছে। ঘেরের পাড়ের ওপর হাঁটু পানি ছিল। নেট, কচুরিপানা ও ঘাস দিয়ে মাছ ভেসে যাওয়া ঠেকানোর চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু কতদূর আছে জানি না।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল বলেন, জেলার সাড়ে ৭ হাজার মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে ১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। চাষিদের ঘুরে দাড়াতে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

গত শুক্রবার রাত থেকে সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত বিরামহীন বৃষ্টিতে বাগেরহাটে এই ক্ষয়ক্ষতি হয়। চিংড়ি সেক্টরকে টিকিয়ে রাখতে চাষিদের সরকারি সহায়তা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।