নিজস্ব প্রতিবেদক: তিন জেলায় বজ্রপাতে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৮ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতে নরসিংদীতে চারজন, টাঙ্গাইলে দুইজন ও গাজীপুরে একজনের মৃত্যু হয়।

শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুরের কাওরাইদ ইউনিয়নের গলদাপাড়া গ্রামে বজ্রপাতে ফাতেমা আক্তার (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। ফাতেমা আক্তার উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের গলদাপাড়া গ্রামের মো. নূর হোসেনের স্ত্রী।

নিহতের ছেলে জহিরুল ইসলাম জানান, তার মা ফাতেমা আক্তার সকালে নানা বাড়িতে ধান শুকানোর কাজ করছিলেন। ঝড়-বৃষ্টি আসছে দেখে উঠান থেকে তিনি ধান উঠাতে যান। এ সময় বজ্রপাত হলে তার মাকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাবিনা জানান, ওই নারীকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়। বজ্রপাতে তার শরীরের বাম পাশ ঝলসে গেছে।

শ্রীপুর থানার এসআই মো. তানসেন চৌধুরী বজ্রপাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিন সকালে টাঙ্গাইলের কালিহাতীর বীরবাসিন্দা ইউনিয়নের নোয়াবাড়ি গ্রামে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে দুই খালাতো ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা সদরের মৃত আয়নাল হকের ছেলে আমির হোসেন (৫২) ও মৃত নূর হোসেনের ছেলে আফজাল হোসেন (৫৫)।

স্থানীয়রা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার আউলিয়াবাদ বাজারে ঘর ভাড়া নিয়ে আমির ও আফজালসহ কয়েকজন শ্রমিক আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটার কাজ করতেন। শনিবার ভোরে বীরবাসিন্দা ইউনিয়নের নোয়াবাড়ী গ্রামের হযরত আলীর ধান ক্ষেতে ছয়জন শ্রমিক ধান কাটতে যান। পরে বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়।

বীরবাসিন্দা ইউনিয়ন প‌রিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব আলী জানান, সকালে কয়েকজন শ্রমিক স্থানীয় হযরত আলীর ক্ষেতে ধান কাটতে যান। এ সময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হয়। বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই দুইজনের মৃত্যু হয়।

কালিহাতী থানার এসআই রাজীব হোসেন জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতদের মরদেহ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হবে।

শনিবার দুপুর ১২টার দিকে নরসিংদীর সদর উপজেলার চরাঞ্চলের আলোকবালীতে জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মা-ছেলেসহ একইস্থানে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুইজন। এ ছাড়া একই সময় শহরের হাজীপুরে বজ্রপাতে মারা গেছেন আরও একজন।

নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামের কামাল মিয়ার স্ত্রী শরিফা বেগম (৩৫), তার ছেলে ইমন মিয়া (১০), ধানকাটা শ্রমিক রায়পুরার বাঘাইকান্দি এলাকার হাতেম আলীর ছেলে কাইয়ুম মিয়া (২০) ও হাজীপুরের মোসলেহ উদ্দিন (৫৫)।

শরিফা বেগমের আহত স্বামী কামাল মিয়া বলেন, ইমন ও কাইয়ুমসহ কয়েকজন সকাল থেকে ক্ষেতে ধান কাটছিলেন। পরে শরিফা বেগম তাদের জন্য খাবার নিয়ে মাঠে যান। সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে শরিফা বেগম, ইমন, কাইয়ুম গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে একই সময় শহরতলীর হাজীপুরে বজ্রপাতে মারা যান মোসলেহ উদ্দিন।

নরসিংদী সদর থানার ওসি তানভীর আহমেদ বলেন, পৃথক ঘটনায় বজ্রপাতে চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।