তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি দখলদার ইসরাইল। বিশ্বশান্তি রক্ষা করার দায়িত্বে যারা আছে, তাদের অবশ্যই এই হুমকির অবসান ঘটাতে হবে।

শনিবার (১২ অক্টোবর) সার্বিয়া ও আলবেনিয়া সফর শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এরদোগান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ইসরাইল কেবল ফিলিস্তিনের স্থিতিশীলতাকে টার্গেট করছে না, বরং লেবাননের স্থিতিশীলতাকেও আঘাত করছে এবং চারপাশের অঞ্চলে অশান্তি ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

এ সময় ইসরাইলের চলমান আগ্রাসনকে উপেক্ষা করা যাবে না বলে সতর্ক করেন এরদোগান।

সেই সঙ্গে চলমান পরিস্থিতিতে তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থা তেলআবিবের কর্মকাণ্ড এবং তুরস্কের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য পদক্ষেপগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলেও উল্লেখ করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।

এরদোগান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘নেতানিয়াহু এবং তার সাঙ্গপাঙ্গদের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। পাশাপাশি ফিলিস্তিন স্বাধীন হবে এবং লেবানন স্বাধীন থাকবে’।

এ সময় গাজার গণহত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গাজার জনগণের ওপর চালানো গণহত্যা সবার চোখের সামনেই ঘটছে এবং এটি মানব ইতিহাসের অন্যতম লজ্জার অধ্যায় হিসেবে থেকে যাবে। যারা ‘সন্ত্রাসী ইসরাইলের’ পাশে দাঁড়াবে, তারা এই লজ্জার দাগ বহন করবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে।

তুরস্ক আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ

এদিকে বালকান অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য তুরস্কের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে এরদোগান তার সাম্প্রতিক আলবেনিয়া ও সার্বিয়া সফরকে ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ হিসেবে অভিহিত করেন।

এ সফরে এরদোগান আলবেনিয়ার প্রেসিডেন্ট বাজরাম বেগাজের সঙ্গে রাজনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন এবং সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে বিশেষ করে ফেতো-র (FETO) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তুরস্কের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি বালকান অঞ্চলে তুরস্কের নির্মিত সবচেয়ে বড় মসজিদ নামাজগাহ মসজিদের উদ্বোধন করেন। যা কেবল উপাসনার স্থান নয়, একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবেও কাজ করবে।

লেবানন ও সিরিয়ায় ইসরাইলি কর্মপরিকল্পনা

লেবানন ও সিরিয়ায় ইসরাইলের কর্মকাণ্ড ও পরিকল্পনা সম্পর্কে এরদোগান বলেন, ‘ইসরাইল যদি দামেস্ক দখল করে, দখলদাররা তাহলে তুরস্কের সীমান্তের কাছাকাছি চলে আসবে। এ বিষয়ে হয়তো ইসরাইলের পরিকল্পনা থাকতে পারে, তবে আল্লাহই সর্বোচ্চ এবং উত্তম পরিকল্পনাকারী’।

গ্রিসের সঙ্গে সম্পর্ক ও বালকানে জাতিগত উত্তেজনা

এরদোগান এ সময় গ্রিসের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক এবং সংলাপের গুরুত্বও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘ভালো প্রতিবেশীতার নীতি উভয় পক্ষের জন্য উপকারী সমাধান নিয়ে আসার চাবিকাঠি’। এছাড়া কসোভোর মধ্যে বেড়ে চলা জাতিগত উত্তেজনা প্রসঙ্গে তিনি তুরস্কের শান্তির প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট পরিশেষে আঞ্চলিক সংহতির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের এ অঞ্চলটিকে সংহতির মাধ্যমে রক্ষা করতে হবে’। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি