আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মধ্য কেনিয়ার একটি বোর্ডিং স্কুলের ছাত্রাবাসে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১৭ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরো ১৩ জন গুরুতর দগ্ধ হয়েছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে ধারেনা করছে পুলিশ। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) দেশটির পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।

তারা জানায়, শুক্রবার মাঝরাতে কেনিয়ার নিয়েরি অঞ্চলে একটি পাহাড়ের পাশে নাইরি কাউন্টির হিলসাইড এন্দারাশা প্রাইমারি স্কুলে আগুন লাগে। ঘটনার সময় শিশুরা গভীর ঘুমে ছিল। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা করা হচ্ছে। খবর আল জাজিরার।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের পরিচয় ও বয়স তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি, তবে বেশিরভাগকে শিশু বলে বর্ণনা করা হয়েছে। পাঁচ থেকে ১২ বছর বয়সী প্রায় ৮০০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে এ স্কুলে ভর্তি করা হয়।

জাতীয় পুলিশের মুখপাত্র রেসিলা ওনিয়াঙ্গো বলেন, এই ঘটনায় ১৭ জন নিহত হয়েছে এবং আরো বেশ কয়েকজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে লাশগুলো আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে, দেখে কাউকে চেনার উপায় নেই। নিহতদের গড় বয়স প্রায় নয় বছর।

তিনি আরো বলেন, আহতদের মধ্যে ১৬ জনের অবস্থা গুরুতর এবং তাদের নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে ঘটনাস্থলে পুরো উদ্ধার কাজ চালালে আরো লাশ পাওয়া যেতে পারে। আগুন লাগার কারণ এখনো অস্পষ্ট এবং কারণ জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে।

দেশটির প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। এই ঘটনাকে ‘ভয়াবহ ও বিধ্বংসী’ বর্ণনা করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দায়ি ব্যক্তিদের বিচার করা হবে। তিনি এক্স-এ একটি পোস্ট করে জানিয়েছে, ‘শিশুদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা জানাই যারা অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছে।’

রুটোর সহকারী রিগাথি গাচাগুয়া, বোর্ডিং স্কুলগুলির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশকৃত সুরক্ষা নির্দেশিকাগুলি অনুসরণ করা হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য স্কুল প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

দেশটির রেডক্রস সোসাইটি জানিয়েছে, ছাত্র-শিক্ষকের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

স্কুলটি রাজধানী নাইরোবি থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। দেশটিতে পড়াশোনায় বেশি সময় দেয়া এবং স্কুল থেকে যাতায়াতের দূরত্ব কমাতে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে বোডিং স্কুলে ভর্তি করেন। কেনিয়ার স্কুলগুলোতে আগুনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। ২০১৬ সালে নাইরোবির কিবেরার পাড়ায় একটি গার্লস হাইস্কুলে আগুনে নয় জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছিল। এক বছর পরে নাইরোবিতে একটি স্কুলে আগুনে ১০ জন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র মারা যায়। এরপর ২০০১ সালে কেনিয়ার দক্ষিণ মাচাকোস জেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৬৭ জন ছাত্র নিহত হয়।