বাংলাদেশ দল ধাক্কাটা সকালে খায়। সেই ধাক্কা দুপুরেও সামাল দিতে পারেনি। আর বিকেলে এসে গুটিয়ে যায় পুরো ইনিংস। তাও মাত্র ১৪৯ রানে। ভারতের ৩৭৬ রানের জবাবে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থেমেছে ১৪৯ রানে। প্রথম ইনিংসে ২২৭ রানের বিশাল লিড পেয়েছে ভারত।

সকালে ভারতকে দ্রুত গুটিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ আনন্দে ভাসছিল। কিন্তু ব্যাটিং করতে নেমে সেই আনন্দ হারিয়ে যায়। খানিকবাদে পুরো ইনিংসই চুরমার!

শুরুতেই বাংলাদেশের ইনিংসে ধস নামান জাসপ্রিত বুমরাহ ও আকাশ দ্বীপ। ভারতের গতিময় পেস বোলিং এবং স্পিন বিষ সামাল দিতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।

২৬ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশ লাঞ্চে যায়। দ্বিতীয় সেশনে মুশফিকও প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। ৪০ রানে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশের ইনিংস কিছুটা সামাল দেন সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস। এই দুজনে উইকেটে সেট হয়ে যান। এবং তারপরও ভুলটা করেন। দুজনে বাজে শট খেলতে গিয়ে উইকেট হারান। লিটনের আউটের খানিকবাদেই সাকিবও ফিরলেন।

চা বিরতির আগের ওভারে হাসান মাহমুদের ডিফেন্স ভাঙ্গলেন জাসপ্রিত বুমরাহ। লেজের সারির ব্যাটসম্যানদের নিয়ে মেহেদি হাসান মিরাজ কিছুটা লড়াই চালিয়ে যান। ওপেনিং জুটি এবং মিডলঅর্ডারে ভাঙ্গন ধরানোর পর বুমরাহর পেসে বাংলাদেশের ব্যাটিং লেজও তেমন দাপট দেখাতে পারেনি।

আগেরদিন ঠিক যে দুরবস্থার মধ্য দিয়ে ভারতের প্রথম ইনিংস শুরু হয়েছিল দ্বিতীয়দিনের সকালে বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটাও হলো সেই একই ভঙ্গিতে। শুরুর তিন উইকেট নেই ১০ ওভারের মধ্যেই। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফিরলেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। জাসপ্রিত বুমরাহ তার প্রথম ওভারের প্রথম পাঁচ বল করলেন রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে। পাঁচটা বলই রাখলেন আউট সুইংয়ে। ওভারের শেষ বলে দিক বদলালেন তিনি।

ওভার দ্য উইকেট থেকে শেষ বলটা করলেন। এবং সফল হলেন! সাদমান ইসলাম এটাকেও আউট সুইং হচ্ছে মনে করে ব্যাট তুলে বল ছেড়ে দিলেন। কিন্তু বুমরার বল ভেতরে এলো এবং সাদমানের স্ট্যাম্প উপড়ে দিল। বিস্মিত হয়ে প্যাভিলিয়নের রাস্তা ধরলেন সাদমান।

প্রথম ওভারেই উইকেট হারানো বাংলাদেশ দ্বিতীয় ধাক্কা খেল নবম ওভারে। আকাশ দ্বীপ তার দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই জাকির হাসানকে বোল্ড করলেন। গতির কাছেই হার মানলেন জাকির। ব্যাট নামানোর আগেই উড়ে গেল তার স্ট্যাম্প। পরের বলেই মমিনুল হকও ফিরলেন শূণ্য রানে। একই ধরনের বলে মমিনুল আউট সেই একই ভঙ্গিতে, বো..ল্ড! বল তার প্যাডে লেগে স্ট্যাম্প ভেঙ্গে দিল।
২২ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশের ইনিংস শুরুতেই নড়বড়ে হয়ে পড়লো। হ্যাটট্রিকের সামনে দাড়ানো আকাশ দ্বীপ।

কিন্তু লাঞ্চের আগের আকাশ দ্বীপের পাঁচ বল নিরাপদে পার করলেন মুশফিকুর রহিম। তবে লাঞ্চের পর তিনিও বেশিক্ষণ উইকেটে টিকে থাকতে পারলেন না। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট হাতে ব্যর্থতার পাল্লা আরেকটু ভারী হলো এই ইনিংসে।

লিটন ও সাকিবের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল ব্যাটিংয়ের বিপদ বোধকরি দল কাটিয়ে উঠবে। দুজনে উইকেটে পুরোদুস্তর সেট হয়ে যান। কিন্তু যে কায়দায় লিটন দাস আউট হলেন তাতে আরেকবার তাকে অভিযোগটা শুনতে হচ্ছে-দায়িত্বহীন ব্যাটিং!

চেন্নাই টেস্টের প্রথম ইনিংসে এই অভিযোগটা অবশ্য পুরো দলের জন্যই প্রযোজ্য!