borjopat

চলতি বছরের ফেব্রয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আট মাসে বজ্রপাতে ২৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন ৭৩ জন।

শনিবার (৫ অক্টোবর) স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের (এসএসটিএফ) সেগুনবাগিচা কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

দেশের জাতীয় এবং আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকা, কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও টেলিভিশনের স্ক্রল থেকে বজ্রপাতে হতাহতের তথ্য সংগ্রহ করেছে সংগঠনটি।

বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া, জয়পুরহাট ও হবিগঞ্জ জেলায়। এসব জেলায় ১৩ জন করে মারা গেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে বজ্রপাতে প্রাণহানির কোনো ঘটনা নেই। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাকি আট মাসে বজ্রপাতে ২৯৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এর মধ্যে ১১ জন শিশু, ৫৫ জন নারী। ৫৫ নারীর মধ্যে ৬ জন কিশোরী। এছাড়া মোট মৃত্যুর মধ্যে ২৪২ জনই রয়েছে পুরুষ। তাদের মধ্যে কিশোরের সংখ্যা ১৭ জন।

চলতি বছরের ৮ মাসে (ফেব্রয়ারি-সেপ্টেম্বর) শুধু কৃষিকাজের সময় বজ্রপাতে ১৫২ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুধু গরু আনতে গিয়ে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন মাসের বজ্রপাতে হতাহতের পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, বজ্রপাতে ফেব্রুয়ারিতে একজন নিহত হয়েছেন। মার্চে ৯ জন। এর মধ্যে ৮ জন পরুষ ও একজন নারী। এ মাসে আহত হয়েছেন ছয়জন। সবাই পুরুষ।

এপ্রিলে ৩১ জন। এর মধ্যে ২০ জন পুরুষ, ১১ জন নারী। একজন শিশু এবং দুইজন কিশোরী। এ মাসে আহত হয়েছেন একজন পুরুষ। মে মাসে নিহত হয়েছেন ৯৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৭৯ জন, নারী ১৭ জন। তাদের মধ্যে শিশু দুইজন এবং কিশোর দুই ও কিশোরী একজন। এ মাসে ২৮ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ২৩ জন, নারী ৫ জন।

জুন মাসে নিহত ৭৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬১ জন, নারী ১৬ জন। এর মধ্যে শিশু ৫ জন, কিশোর সাতজন। আহত হয়েছেন ১৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১২ জন, নারী দুইজন।

জুলাই মাসে নিহত হয়েছেন ১৯ জন। এর মধ্যে নারী একজন এবং ১৮ জন পুরুষ। আহত হয়েছেন ১০ জন। এর মধ্যে একজন নারী এবং ৯ জন পুরুষ।

এ ছাড়া আগস্টে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন নারী ও ১৪ জন পুরুষ। তাদের মধ্যে একজন করে শিশু, কিশোর ও কিশোরী রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন দুইজন, দুজনেই পুরুষ।

অন্যদিকে, সেপ্টেম্বরে নিহত হয়েছেন ৪৭ জন। তাদের মধ্যে ৪১ জন পুরুষ ও ছয় নারী। দুইজন শিশু, চারজন কিশোর ও দুইজন কিশোরী রয়েছে। আহত হয়েছেন ১২ জন। এর মধ্যে ১০ জন পুরুষ ও দুইজন নারী।

চলতি বছর সবচেয়ে যে সব জেলায় নিহত হয়েছে তার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৩ জন, জয়পুরহাটে ১৩ জন, হবিগঞ্জে ১৩ জন, ফেনীতে ১২ জন, কক্সবাজারে ১০ জন এবং গাইবান্ধায় ১০ জন।

বজ্রপাতে মৃত্যুর হার কমাতে সংগঠনের পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি জানানো হয়েছে। এসব দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা। দাবিগুলো হলো-

১. পাঠ্যপুস্তকে বজ্রপাত সচেতনতার অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করা।

২. ৩০ মিনিট আগেই বজ্রপাতের পূর্বাভাস জানা যায়, সরকারি তথ্যের (গভ. ইনফো) মাধ্যমে তা জানানো।

৩. কৃষক ও জনসাধারণের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়াতে সভা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

৪. মাঠে মাঠে শেল্টার সেন্টার স্থাপন।

৫. আহতদের ফ্রি চিকিৎসা দেওয়া করা।