সিনেমা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রভাবশালী মাধ্যম। তখনকার সময় ইংরেজ সরকার ব্যাপকভাবে হস্তক্ষেপ করতেন সিনেমা প্ল্যাটফর্মে।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাবশালী নৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাঠামো থাকার পরও সমসাময়িক বিশ্বে ঘটনাগুলো আশ্চর্যজনকভাবে কিছুটা ভাবিয়ে তুলেছে।

ধারণা করা হয়, আংশিক যদিও মিথ্যা হয় এরপরও প্রচারণাটি অবশ্যই দুর্দান্ত হতে হবে এবং এর কারণ হচ্ছে জার্মানির সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল ব্রিটেন। যুদ্ধে জয়ের দাবি করা হলে অডিও-ভিডিওতে বিশ্বকে পুননির্মাণ করা এবং সঙ্গে জাতীয় ভাবনা থাকতো। তবে এসবই আত্মতুষ্টি এবং অস্বস্তিকর।

এখন পরিবর্তন এসেছে। আধুনিক সময়ে রাষ্ট্রের সঙ্গে এগিয়ে গেছে সিনেমা শিল্প। যদিও শুরু থেকেই উপন্যাস এবং মনোযোগ আকর্ষণকারী কাল্পনিক ও বাস্তবভিত্তিক-বিষয় মিশ্রিত করার ক্ষমতা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণার জন্য উপযুক্ত মাধ্যম করে তুলেছিল। তবে এতে কিঞ্চিৎ পরিমাণও অবাক হওয়ার কিছু নেই। কেননা, ব্রিটিশ সিনেমার ইতিহাসে দেশটির মতোই এর গল্প রচনা করা হয়েছে।

উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা যদি কেবলই একটি কার্যক্রম হয় যা অনিচ্ছাকৃতভাবে যুক্ত, তাহলে এর অধ্যায় ১৯৪৫ সালেই শেষ হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু এর পরিবর্তে সুয়েজ সংকটের কয়েক দশক পর এবং উপনিবেশকরণ ও পানি যুদ্ধের হুমকির প্রতিক্রিয়া হিসেবে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছিল এটি। আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কখনোই এর ব্যতিক্রম ছিল না, যা ছিল খুবই সাধারণ।

ফ্রান্সেস স্টোনর সউন্ডাার্স সেন্ট্রাল অফিস অব ইনফরমেশন (সিওআই) কর্মসূচিতে পানি যুদ্ধের সাংস্কৃতিক পৃষ্ঠপোষকতা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। যা যুক্তরাজ্যের তথ্য পরিষেবাগুলোয় কাজের ক্ষেত্রেও একইরকম কিছুটা দেখা গেছে। ব্রিটিশদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সিনেমা বিস্তৃত সাংস্কৃতিক অঙ্গন পরিচালিত করেছে। ‘দ্য পেসমেকার’-এর মতো টেলিভিশন সিরিজে নতুন প্রজন্মের কাছে সিওআই সাংস্কৃতিক বিশ্বকে তুলে ধরেছে।

এমন গণতন্ত্রপন্থী উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা আত্মসচেতনভাবে আন্তঃযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠিত। এরপরও এ নিয়ে দ্বিমত প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছিল।

ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী জ্যাক ইলুল পর্যবেক্ষণ করেছিলেন যে, যুদ্ধোত্তর সময় গণরাজনীতি দ্বারা পরিচালনা এবং ক্রমশ মধ্যবিত্তের মনস্তাত্ত্বিক উদ্বেগগুলোকে পরিচর্যা থেকে দূরে রাখতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচারণা লক্ষ্য করা গেছে।

তবে বিশ শতকের গোড়ার দিকে উচ্চভিলাষী রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে স্বতন্ত্র পরিচয়কে চাপা দিতে নতুন আঙ্গিকে প্রতিস্থাপিত হয় সিনেমা শিল্প। কারণ, তখন এটি সেভাবে বিকৃত ছিল না এবং আদর্শিক অবস্থান প্রসারিত হয়েছিল। ফরাসি সমাজবিজ্ঞানীর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী মানুষ দাবি করেছিল, তাদের আশ্বাসের প্রয়োজন ছিল।

অনেক বুদ্ধিজীবী, লেখক ও নির্মাতারা সক্রিয়ভাবে বিশ্বের মনস্তাত্ত্বিক, প্রযুক্তিগত ও সমাজতাত্ত্ব পুননির্মাণে যুক্ত আছেন। তাদের দৃশ্যকল্প উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচারণার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি উন্মুক্ত এবং সংবেদনশীল ছিল। জার্মানি নির্মাতা লেনি রিফেনস্টাহল এবং সোভিয়েতের নির্মাতা সের্গেই আইজেনস্টাইনের মতাদর্শ হচ্ছে, এখন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচারণার সিনেমা অডিও-ভিডিওর স্বতন্ত্র পরিবেশ গঠন হওয়ায় কম।

উল্লেখ্য, ব্রিটিশ সিনেমার স্বর্ণযুগ হিসেবে বর্ণনা করা সময়ও তাদের সিনেমাগুলো যুদ্ধকালীন সুস্পষ্টভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা চালিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে রয়েছে ব্রিটিশ নির্মাতা আলেকজান্ডার কোর্দা থেকে শুরু করে হামফ্রে জেনিংসের মাধ্যমে ‘ডেজার্ট ভিক্টরি’, ‘মিসেস মিনিভার’ ও ‘দ্য লাইফ অ্যান্ড ডেথ অব কর্নেল ব্লিম্প’ সিনেমাগুলো।